Latest News

হ‌ুমায়ূন ও শাওনের বিয়ের গল্প

                         হ‌ুমায়ূন ও শাওনের বিয়ের গল্প

হ‌ুমায়ূন আহমেদ ও শাওন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘১৩ সংখ্যাটা আমার জন্য সবচেয়ে শুভ। আমার জীবনের প্রিয় মানুষটির জন্ম ১৩ তারিখ। আমাদের বিয়ের তারিখও ১৩ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ হ‌ুমায়ূন ভাবলেন, এক দিন আগেই বিয়ে করবেন। আজ ১২ ডিসেম্বর, আমাদের বিয়ের তারিখ।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন মেহের আফরোজ শাওন, জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও নির্মাতা প্রয়াত হ‌ুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী।

আজ ১২ ডিসেম্বর হ‌ুমায়ূন আহমেদ আর শাওনের বিবাহবার্ষিকী। ২০০৪ সালের ১২ ডিসেম্বর হ‌ুমায়ূন আহমেদ ও শাওন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের ১৩তম বার্ষিকীতে বিয়ের দিনের কিছু গল্প তিনি তুলে ধরেছেন। এসব গল্প অনেকেরই অজানা। শাওন লিখেছেন, ‘খুব সাদামাটাভাবেই হওয়ার কথা ছিল আমার বিয়েটা। ভেবেছিলাম কোনো রকম একটা শাড়ি পরে তিনবার কবুল বলা আর একটা নীল রঙের কাগজে কয়েকটা সাইন।’
হ‌ুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করে শাওন লিখেছেন, ‘আজ ১২ ডিসেম্বর। ২০০৪ সালের এই দিনে কুসুম (‘শ্রাবণ মেঘের দিনে’ ছবিতে শাওনের চরিত্রের নাম) আর হ‌ুমায়ূন নতুন জীবন শুরু করে। কুসুম তার জীবনের সবচেয়ে শুভ ১৩ বছর পার করেছে। কুসুমকে শুভেচ্ছা। কুসুমের হ‌ুমায়ূনকে শুভেচ্ছা।’
নিজের বিয়ের আগের দিনের গল্প বলতে গিয়ে শাওন লিখেছেন, ‘১১ ডিসেম্বর হ‌ুমায়ূন আমাকে জোর করে পাঠালেন নিউমার্কেটে, উদ্দেশ্য একটা হলুদ শাড়ি কিনে আনা, যেন সন্ধ্যায় আমি হলুদ শাড়ি পড়ে নিজের গায়ে একটু হলুদ মাখি। বললেন, “তোমার নিশ্চয়ই বিয়ে নিয়ে, গায়েহলুদ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। আমাকে বিয়ে করার কারণে কোনোটাই পূরণ হচ্ছে না। আমি খুবই লজ্জিত। তারপরও আমি চাই, আজ সন্ধ্যায় তুমি হলুদ শাড়ি পরে ফুল দিয়ে সাজবে, নিজের জন্য, তোমার ভবিষ্যৎ সন্তানের জন্য, আমার জন্য। আমরা দুজন মিলে আজ গায়েহলুদ করব।” আমি একা একা শাড়ি কিনেছি। গাঁদা ফুলের মালা কিনেছি। কী মনে করে একটা লাল পাঞ্জাবিও কিনেছি।’
শাওন আরও লিখেছেন, ‘সন্ধ্যায় নিজে নিজে সেজেছি। বাথরুমের আয়নায় নিজেকে দেখে আমার চোখ ফেটে পানি চলে আসে। চোখ মুছে খোঁপায়-কানে গাঁদা ফুলের মালা গুঁজেছি। হঠাৎ শুনি দরজায় ধুমধাম শব্দ। দরজা খুলে বেরিয়ে দেখি ডালা কুলো হাতে মাজহার ভাইয়ের স্ত্রী স্বর্ণা ভাবি, পাশে তিন বছরের ছোট্ট অমিয়, একটু দূরে লাল পাঞ্জাবি পরে হ‌ুমায়ূন ঠোঁট টিপে হাসছেন। হইহই করে ঘরে ঢুকলেন হ‌ুমায়ূনের আরও বন্ধু আর তাঁদের স্ত্রীরা। তাঁরা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যান পাশের রুমে।’

সেদিন যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের কথা মনে করে শাওন লিখেছেন, ‘চার-পাঁচটা প্রদীপ দিয়ে সাজানো ছোট্ট একটি রুমের পাশ। সেখানে হলুদের কী স্নিগ্ধ ছিমছাম আয়োজন! লেখক মইনুল আহসান সাবের ভাইয়ের স্ত্রী কেয়া ভাবি আর মাজহার (প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম) ভাইয়ের স্ত্রী স্বর্ণা ভাবি আমার আর হ‌ুমায়ূনের হাতে রাখি পরালেন। সে কী খুনসুটি! সে কী আহ্লাদ! সে এক অন্য রকম গায়েহলুদ। আরেক ভাবি নামিরা সব মেয়ের হাতে মেহেদি দিয়ে দেন। আমার আর হ‌ুমায়ূনের দুই গাল কাঁচা হলুদে রাঙা।’

 

No comments:

Post a Comment

News Designed by Templateism.com Copyright © 2014

Theme images by Bim. Powered by Blogger.
Published By Gooyaabi Templates